রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ন
ইয়াছিন আরাফাত আশিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি, কালের খবর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার- আখাউড়ায় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দশ লক্ষ টাকা কর্য (হাওলাত) নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে পরো টাকা আত্মসাৎ করতে ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, ব্যবসায়ী মশিউর রহমান শান্ত পৌর শহরের মসজিদ পাড়ার আবদুল করিমের ছেলে ও মো. হুমায়ুন কবিরের ছোট ভাই।
এ ব্যাপারে মশিউর রহমান শান্ত
সাংবাদিককে বলেন, খরমপুর গ্রামের জিয়া পাড়ার দিদার হোসেন খাদেমের মেয়ে হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগম তাদের প্রয়োজনে গত ০৪-০৪-২০২২ ইং তারিখে
আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক আখাউড়া শাখার একাউন্ট নাম্বার 0711120001311, 0711120069381, চেক নং abi. msd. c.5406325, 5406325, দুইটি চেকের মাধ্যমে পাঁচ লক্ষ করে দশ লক্ষ টাকা আমার কাছ থেকে তাদের বিশেষ প্রয়োজনে কর্য (হাওলাত) নেন।
কিছু দিন পর আমি পাওনা টাকা ফেরত চাইলে, হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগম, দেম দিচ্ছি বলে টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা শুরু করে। তারপর আমাকে তারা বলেন, আমাদের স্বাক্ষর করা চেক গুলো ব্যাংকের জমা দিয়ে তুমি তোমার পাওনা টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নাও। আমি তাদের স্বাক্ষর করা উল্লেখিত ব্যাংকের চেক গুলো ব্যাংকে জমা দিলে, ব্যাংক ম্যানেজার বলেন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট শূন্য, কোন টাকা নেই।
এভাবে হেপি ও তার মা মনোয়ারা বেগম আমার সাথে জালিয়াতি করে, এবং আমার কাছ থেকে কোন টাকা নেইনি বলে আমাকে জানান। আমি নিরুপায় হয়ে গত ০৭-০৪-২০২২ তারিখে ব্যাংকের চেক গুলো ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করে।
গত ২৪-০৫-২০২২ তারিখে
হেপি ও তার মা মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে দুইটি মামলা দায়ের করি। আসামী হেপি আক্তার মামলা নং ৮৫০/২২, আসামী মনোয়ারা বেগম মামলা নং ৮৫১/২২, আদালতের লিগ্যাল নোটিশের জবাবে তাদের চেকবই আখাউড়া সড়ক বাজারে হারিয়ে গেছে, এমন মিথ্যা কথা বলে হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগম আদালত থেকে জামিনে আসে।
মশিউর রহমান শান্ত আরো বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চেক ডিজঅনারের মামলা দায়ের করার পর হেপি আক্তার আমাকে বারবার হুমকি দিয়ে বলেছিল, তাদের বিরুদ্ধে আদালতে করা মামলা গুলো আমি আদালত থেকে না উঠালে, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবে। তিনি বলেন, হেপি আক্তার আমার দেয়া আদালতের মামলার আক্রোশে আখাউড়া থানায় আমার নামে একটি মিথ্যা হয়রানিমুলক অভিযোগ করলে, পুলিশ আমাকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করে। পরে জানতে পারি আমার বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি মামলা দেওয়া হয়েছে।
তবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মশিউর রহমান শান্ত আরো বলেন, হেপি খরমপুর নামে একটি ফেইজবুক ফেইক আইডি তার আপন চাচী মিনারা বেগমের এই মোবাইল সিম দিয়ে 01863-397393 সে নিজে আইডি খুলে, আর তার নিজের নোংরা ছবি নিজেই তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে দেয়। উল্টো আমাকে ফাঁসাতে চেয়েছিল।
মশিউর রহমান শান্ত তিনি আরো বলেন, হেপি আক্তার ফরেনসিক রিপোর্ট আমার বিরুদ্ধে আদালতে দেখাতে পারেনি।
হেপি ও তার মা মনোয়ারা বেগম আমার কাছ থেকে কোন টাকা নেইনি বলে আদালতেও মিথ্যা জবান বন্ধি দেয়। তবে গত বৃহস্পতিবার ১৩ ই জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুগ্ন দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের রায়ে হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগমকে, দোষী সাব্যস্ত করে। এবং আসামী হেপি ও তার মা মনোয়ারা বেগমকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও দশ লক্ষ টাকার অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালত।
এ বিষয়ে বাদী মশিউর রহমান শান্তর বড় ভাই মো. হুমায়ুন কবির বলেন, হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগমসহ আমার ভাই শান্তর পরিবারের লোকজন আসা যাওয়া করতো। প্রতারক হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগমকে আমার ছোট ভাই মশিউর রহমান শান্ত দশ লক্ষ টাকা কর্য (হাওলাত) দিয়ে উপকার করেছে। কিন্তুু হেপি আক্তার ও তার মা মনোয়ারা বেগম আমার ভাইয়ের সাথে তারা প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে। এবং মো. হুমায়ুন কবির আরো বলেন, হেপি আক্তার কয়েকজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তির যুগ সাজসে ও কুপরামর্শে আমার ভাইয়ের নামে আখাউড়া থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে আমাদের পরিবারের মান ক্ষুন্ন করেছে। আদালতে তাদের মিথ্যা অভিযোগ এখন মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। আর ভাই শান্তর চেক ডিজঅনার মামলার সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় আদালতে আমরা সুবিচার পেয়েছি।
এ বিষয়ে বিবাদী পক্ষের মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে বিবাদী হেপি আক্তার সাংবাদিকদেরকে বলেন, মশিউর রহমান শান্তকে আমিও আমার মা কোন চেক দেয়নি এবং তার কাছ থেকে আমরা কোন টাকা নেইনি, বাদী মিথ্যা কথা বলেছে। এই বলে হেপি আক্তার ঘটনাটি অস্বীকার করেন। এবং বলেন, আদালত আমাদের কারাদণ্ড দেইনি, এর কোন প্রমান নেই বলে তিনি দাবি করেন। হেপি আক্তার আরো বলেন, আদালতের রায়ে আমরা পাঁচ লক্ষ টাকা আদালতে জমা করে সময় চেয়ে আদালত থেকে আপিল করেছি।